ঢাকাবুধবার , ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. অর্থনীতি এবং ব্যবসা বাণিজ্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. ইসলাম
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কলাম
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. জবস এন্ড ক্যারিয়ার
  9. জাতীয়
  10. ধর্ম
  11. বাংলাদেশ
  12. বিনোদন
  13. ব্যবসা বাণিজ্য
  14. ব্রেকিং
  15. রাজনীতি

শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সঠিক পদক্ষেপ নয়!

বাংলা ট্রিবিউন
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪ ৬:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

যেখানে রাজনীতি নাই সেখানে অপরাজনীতির বীজতলা তৈরি হয়। এই বীজতলা থেকে অপরাজনীতির চারাগাছ বেড়ে ওঠে। তারপর উপযুক্ত পরিবেশে, উপযুক্ত কাল পরিক্রমায় এই চারাগাছ মহীরুহ বটবৃক্ষের অবয়বে আবির্ভূত হয়। এমনটাই হয়ে আসছে আবহমান কাল থেকে।‌ রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রবণতা একটা রাষ্ট্রকে অন্ধকারাচ্ছন্ন পথে ধাবিত করে। রাষ্ট্রের সুস্থ্য ওস্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ করে। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংস্কৃতি থিতু হবার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এ ইতিহাস‌ অনেকটাই ঐতিহ্যের ও গৌরবের। ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম থেকে শুরু করে পাকিস্থান আন্দোলন, নবগঠিত পাকিস্থানের নয়া উপনিবেশিক শৃক্সখল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে উত্তরণে ছাত্র রাজনীতি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে। তবে বিগত ষোল বছরে ছাত্র রাজনীতির নামে যা হয়েছে তা মূলত অপরাজনীতি ও দলীয় লেজুড়বৃত্তি। একদলীয় বাকশালী সরকার ভিন্ন মত ও পথের কাউকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়নি। এর ফলে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা বাধাগ্রস্থ হয়েছে। স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাশীল রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকাশ রুদ্ধ হয়ে গেছে। এর পরিণামও হয়েছে ভয়াবহ। রাজনীতি প্রকৃত রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাত থেকে ফসকে বেরিয়ে অসাধু ব্যবসায়ী, দুর্নীতিগ্রস্থ আমলা ও নির্লজ্জ দালালদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। দেশ পতিত হয় অপরাজনীতির দৈত্য-দানবদের তৈরি অতল গহ্বরে।
দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর যখন দেশে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ ফিরে এসেছে, ঠিক তখন একটি বিশেষ মহলের মধ্যে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জোরদার হচ্ছে। কোথাও কোথাও রাজনীতি ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যার ফলাফল সুখকর হবে না। রাজনীতি বিমুখ তরুণ প্রজন্ম দেশের নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়বে অচিরেই। এমনিতেই সক্রিয় রাজনীতি ও রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব থেকে তরুণ প্রজন্মকে সুকৌশলে সরিয়ে রাখা হয়েছে যুগের পর যুগ। উজ্জীবিত তারুণ্যের জায়গায় ঘুনে ধরা মরচে পড়া রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে বারংবার।

আমার প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত কাজ কী? আর আমাদের দেশে হচ্ছেটা কী?

বিশ্ববিদ্যালয় মূলত মুক্ত জ্ঞান চর্চার জায়গা। উন্নত গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা পরিচর্যার জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের নিরলস গবেষণালব্ধ প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন ধ্যান ধারণা তৈরি করা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির মহাসড়কে হাজির করা। মানুষের মধ্যে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক জ্ঞান সঞ্চার করে প্রকৃত দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা। বর্হিবিশ্বে এমনটাই হয়ে আসছে আবহমান কাল থেকে। আমাদের কোন বিশ্ববিদ্যালয় কি পেরেছে সনদ নির্ভরতা কাটিয়ে পুরোদস্তুর গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে? উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে বিশ্ব পরিমন্ডলে একটা শক্তিশালী জায়গা তৈরি করে নিতে। এক্ষেত্রে কেন পারেনি? কেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কাজে নিয়োজিত করতে পারছে না? সমস্যা কি শুধুই রাজনৈতিক? রাজনীতি তুলে দিলে কি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে? মোটেও না। বরং এতে সামগ্রিক ফলাফল হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনাই বেশি।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গঠনটাই শিক্ষা, গবেষণা ও উন্মুক্ত জ্ঞান চর্চার পরিপন্থী। উপনিবেশিক অভিঘাতে জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন দেশের সরকার উপনিবেশিক বৃত্ত থেকে বের করে আনার পরিবর্তে নতুন এক দুষ্টচক্রে আবদ্ধ করেছে। এই ব্যর্থতা জাতীয় রাজনীতির। নিষিদ্ধ করতে চাইলে জাতীয় রাজনীতি‌ নিষিদ্ধ করা উচিত। আশ্চর্যের বিষয়, কেউই কিন্তু এ বিষয়ে কথা বলছেন না! নষ্ট জাতীয় রাজনীতির কারণে নষ্ট হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি।
এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। জাতীয় রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করতে হবে সর্বাগ্রে। পরিশেষে বলতে চাই, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পুরোপুরি গবেষণা নির্ভর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা না গেলে কোন প্রচেষ্টাই সফল হবে না। হয়তো কিছু সময়ের জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ করা যাবে কিন্তু রাজনৈতিক চর্চা কোনভাবেই বন্ধ হবে না। নিষিদ্ধ পরিবেশে যে রাজনৈতিক চর্চা হবে তা হবে অপরাজনীতি। যা নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা কারোই নাই।

আকতারুল ইসলাম
কবি ও গবেষক
মেইল: infoscience475@gmail.com

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।