1. mskamal124@gmail.com : thebanglatribune :
  2. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৩ বিলিয়ন ডলার - The Bangla Tribune
সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪ | ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৩ বিলিয়ন ডলার

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

দীর্ঘদিন স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন ছিলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের। ছিল দেশের বিভিন্ন বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা। যুক্তরাষ্ট্র রফতানি আয়ের প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিনই কমছিল পোশাক রফতানিসহ অন্যান্য বিনিয়োগ। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে গিয়েও শেখ হাসিনা তার পতনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা। আর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ড. ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার এখনও দেড় মাস হয়নি। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অর্থায়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ইতোমধ্যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতিও মিলেছে। পাইপলাইনে আছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। যেগুলো খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে। বাংলাদেশকে ৩ বিলিয়ন ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলারের বেশি উন্নয়ন সহযোগিতা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত রোববার এ লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) চুক্তি সই হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই চুক্তি সই হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক ৭৫০ মিলিয়ন পলিসিভিত্তিক ঋণের প্রস্তাব করেছে।
এ ছাড়াও ২৫০ মিলিয়ন বিনিয়োগ ঋণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন পলিসিভিত্তিক ঋণের প্রস্তাব করেছে। এর সাথে আরও ২০০ মিলিয়ন বিনিয়োগ ঋণ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। এদিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন এবং উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে এ জন্য মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক সহকারী সচিব ব্রেন্ট নেইম্যান বাংলাদেশ সফর করছেন। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দক্ষিণ এশিয়া তথা বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর। বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের বাংলাদেশ সফরসহ সম্পর্কের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন দূর করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে পাড়লে আর্থিকখাতে দেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র সকল ধরনের সাহায্য করবে। দাতা সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। অর্থনৈতিক আরেক পরাশক্তি চীন এই সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। জাপান ইতোমধ্যে বড় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কোরিয়া পাশে আছে। চীনের হাতকে আরও প্রশস্ত করাতে পারলে এবং মধ্যপ্রাচ্য এখন আর্থিকভাবে খুব সচ্ছল আছে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করে বিনিয়োগে আকর্ষণ করানো গেলে দেশে আবার সুদিন ফিরবে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন স্বৈরাচার সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কারণে দেশের যে ভঙ্গুর অর্থ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছিল তা আবার স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তবে সবকিছু নির্ভর করছে দেশকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার ওপর।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর আবু আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ায় ঘুরে দাঁড়াবে দেশের অর্থনীতি- সবাই এই ধারণা করেছিল। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, জাইকাসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনে সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সহযোগিতার হাতও বাড়িয়েছে। গতকাল জার্মানী জ্বালানীখাতে সহযোগিতার কথা বলেছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের কোন কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফর অবশ্যই দেশের জন্য বিশেষ কিছু বলে উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ। তবে সবকিছু নির্ভর করছে দেশের শৃঙ্খলা, সুশাসন এবং গণতন্ত্র কতোটা সমুন্নত রাখতে পারা যায় তার ওপর। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এই সরকারের ওপর অনেক আস্থাশীল। আমাদেরকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এতোদিন স্বৈরাচার সরকারের পাশে ছিলো না। তবে বাক স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার নিয়ে আগে থেকেই জনগণের পাশে ছিল। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি কোন দেশকে সহায়তা করতে পারে না। এক্ষেত্রে তারা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারী বিভাগের ক্ষমতা বা হোয়াইট হাউসের নিজস্ব ক্ষমতায় বাংলাদেশের পাশে থাকতে পারে। ইতিমধ্যে এসব দাতা সংস্থা সেই আশ্বাসও দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারকে আস্থায় নিয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের রফতানিতে জেনারেলাইজড স্কিম অফ প্রিফারেন্সেস (জিএসপি) সুবিধাকে পুনর্বহালের কথা বলেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের এভাবে সরাসরি পাশে থাকায় অন্যান্য দেশের বিনিয়োগও বাড়বে বলে আশাবাদী প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বৃত্ত অর্থ দেশে বিনিয়োগের জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020