1. mskamal124@gmail.com : thebanglatribune :
  2. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
সবচেয়ে ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে চাই : ড. ইউনূস - The Bangla Tribune
সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪ | ১০:২৬ অপরাহ্ণ

সবচেয়ে ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে চাই : ড. ইউনূস

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মাসে নেয়া নানা উদ্যোগ ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলেছেন ডয়চে ভেলেকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে৷ তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে চাই। -ডয়েচে ভেলে বাংলা
সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী এবং আমাদের একমাত্র প্রতিবেশী বলা যায়৷ কারণ, চারদিক থেকেই ভারত আমাদের আছে৷ কাজেই তার সাথে আমাদের সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক হওয়া উচিত এবং হবে৷ এ ছাড়া আমদের গত্যন্তর নাই, তাদেরও গত্যন্তর নাই৷ এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমার তো অগ্রাধিকার দেবার কথা না। অগ্রাধিকারগুলো সামনে এসে গেছে। আমি বাছাই করার সুযোগও পাইনি। শান্তি-শৃঙ্খলা হলো সবার প্রথমে। যেহেতু বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা আসছি, সরকার গঠন করেছি, কাজেই প্রথম দায়িত্ব হলো শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এটার উপরেই জোর দেয়া হচ্ছে। এরকম বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে হয় নাই। ছাত্রদের সঙ্গে সাধারণ জনগণ এগিয়ে এসেছে। এমন কোনো লোক ছিল না যে এটাতে শরিক মনে করে নাই। জনমত নির্বিশেষে এই আন্দোলনে শরিক হয়েছে। আমরা একটা বিরাট দায়িত্ব নিয়ে আসছি। এদিকে হলো বিপ্লব আর এদিকে স্বপ্ন। শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। মানুষের সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা। আমাদের দায়িত্ব অনেক। অর্থনীতি একটা বিশৃঙ্খল, ভঙ্গুর অর্থনীতি হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে মানুষ এত বিক্ষুব্ধ। সব কিছু লুটপাট। এটা লুটের একটা সরকার ছিল। কাজেই সেই লুটের সরকার থেকে সত্যিকার সরকার, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা- এটাও মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা। এবং এটা দ্রুত দেখতে চায়। সেগুলো আমাদের করার চেষ্টা। এক মাসের মধ্যে আমাদের যতটুকু সম্ভব করেছি।

রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি সংবিধান পুর্নলিখনের দাবিও উঠেছে৷ বলা হচ্ছে সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা মস্ত বড় সুযোগ। এই সুযোগ জাতির জীবনে আর আসবে কিনা জানি না। না আসাটাই স্বাভাবিক হোক। গোড়াতে হাত দিতে হবে, সংবিধানে হাত দিতে হবে। তো সেখানে প্রশ্ন হচ্ছে- সংবিধান নতুন করে লিখতে হবে, নাকি এই সংবিধানই কিছু সংশোধন করা হবে? এ বিষয়ে মতভেদ আছে। এইজন্য কমিশন হবে, বিচার বিবেচনা করবে, একমত হবে। এর উপর ভিত্তি করে নির্বাচন হবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত তো আমরা নির্বাচনের রূপরেখা ঠিক করতে পারছি না। কী ধরনের নির্বাচন হবে, কী কী নির্বাচন হবে- সবকিছুই সংবিধানের ভিতরে থাকবে। পুরো আন্দোলনের ব্র্যান্ড নেইম হচ্ছে সংস্কার। সংস্কার হচ্ছে আকাঙ্ক্ষা। আমরা সেই আকাঙ্ক্ষার অংশীদার। আমরা দায়িত্ব নিয়েছি যেন আমরা সেই আকাঙ্ক্ষা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পূরণ করতে পারি।
ব্যবসা এবং অর্থনীতিকে পুনরায় সন্তোষজনক অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়ার পথে কী কী বাধা দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, লুটপাটের একটা অর্থনীতি। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল নিজের টাকা -পয়সা করার আগ্রহ। ৬০ হাজার কোটি টাকা শুধু ছাপানো হয়েছে তাদের সুবিধার জন্য। কিন্তু মানুষের যে মূল্যস্ফীতি হবে- এটার দিকে তাদের কোনো মনোযোগ ছিল না। ব্যাংকিং সিস্টেম পুরোটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলতে কোনো জিনিস ছিল না। এগুলো সমস্ত কিছু নতুন করে গড়ে তুলতে হচ্ছে। সব কিছু নতুন করে করতে হচ্ছে। দেশকে বাঁচাতে হলে, সামনে নিয়ে যেতে হলে করতে হবে। আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ভিত্তিটা করতে হবে। কিছুটা শৃঙ্খলা এসেছে। সবটা পেরে গেছি তা না। বৈদেশিক মুদ্রার অভাব আছে। বড় বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে। বিশাল বিশাল অংকের ঋণ নেয়া হয়েছে,সেগুলো শোধ করার পালা এসেছে আমাদের উপরে। উনারা নিয়ে গেছেন, ভোগ দখল করেছেন। এখন টাকাটা জনগণকে শোধ করতে হবে। সেই পরিশোধের টাকা কোথা থেকে আসবে, কিভাবে আসবে এই চিন্তা আমাদের বড় চিন্তা। আমরা পৃথিবীর সামনে এমন একটা রাষ্ট্র হতে চাই না যে তার অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারে না। আমরা অঙ্গীকার রক্ষা করতে চাই। অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির উপরে দাঁড় করাতে চাই, যেন ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি না হয়।

ছাত্রদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নাগরিক অধিকার, মানুষের নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার, পুলিশের সেবা পাওয়ার অধিকার এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি বলে নানা মহল থেকে দাবি করা হয়েছে৷ এবিষয়ে তার মতামত চাওয়া হলে তিনি বলেন, চেষ্টা করছি আমরা, কিন্তু পুরোপুরি হয়নি। অনেক লোক পালিয়ে গেছে, যারা জনপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছিল। অথবা যারা আছে, তাদের সহকর্মীরা তাদের উপর ভয়ানক বিক্ষুব্ধ। বিক্ষোভের মুখে তারা পদত্যাগ করে চলে গেছেন। কাজেই এক বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। জনপ্রশাসনে এই শূন্যতা পূরণ আবার মুশকিল। এরে দিলেন ওরে কেন দিলেন না ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন উঠছে । তো এর মধ্য থেকেই আমরা মানুষকে বোঝাচ্ছি, দেখো, আমদের বিবেচনায় যেটা সঠিক সেটাই আমরা করছি। আমরা করি একটা, আমাদের উপর আস্থা রাখেন। বহু পরিবর্তন হয়েছে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হয়েছে। সব ভিসিই চলে গেছেন। ভিসি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, সাথে প্রোভিসি দিতে হচ্ছে। এবং এই নিয়োগে সবাই খুশি। আবার নতুন করে বিচার ব্যবস্থা চালু হবে। অনেকগুলো পরিবর্তন আমাদের একসাথে করতে হচ্ছে। অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020