1. mskamal124@gmail.com : thebanglatribune :
  2. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
বন্যাদুর্গত এলাকায় বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি - The Bangla Tribune
সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ | ৩:২৬ পূর্বাহ্ণ

বন্যাদুর্গত এলাকায় বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, জুন ২২, ২০২৪

দেশের উত্তর জনপদের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে ক্রমাগত। একের পর এক তলিয়ে যাচ্ছে নদ-নদী সংলগ্ন উত্তরের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার পাড়ের অনেক নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ভারত ঢল-বন্যার চাপ কমাতে বিনা নোটিশে তিস্তার উজানে গজলডোবা বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দিয়েছে। গজলডোবা বাঁধের সেই ঢলের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে উত্তর জনপদের বিশেষ করে চর ও নিম্নাঞ্চলসমূহ। আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের ৪টি জেলা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম। রংপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
তাছাড়া উজানভাগে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল, আসামে টানা অতিবৃষ্টির কারণে নেমে আসছে ঢল-বান এবং দেশের অন্যতম প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানি প্রতিদিনই বৃদ্ধির দিকে রয়েছে। পৌঁছে যাচ্ছে সতর্কসীমার খুবই কাছাকাছি। এর ফলে প্লাবিত হচ্ছে সিরাজগঞ্জসহ যমুনাপাড়ের নিম্নাঞ্চল। অন্যদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতি কোথাও কোথাও কোথাও পানি হ্রাস পেয়ে উন্নতি, আবার কোথাও অপরিবর্তিত রয়েছে। তিস্তা, সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন-সুরমা ও সোমেশ^রীসহ দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের ৫টি নদ-নদী ১০টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।গতকাল শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে নদ-নদী প্রবাহের প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত কয়েকদিন যাবত তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তায় পানি কাউনিয়া পয়েন্টে আগের দিনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তায় পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সে.মি. নিচে রয়েছে। উজানে ভারতের গজলডোবা বাঁধের গেইটগুলো খুলে পানি ছেড়ে দেয়ায় দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তার পানি।
তাছাড়া ভারতের ঢলে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম নদী ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বাড়ছেই। গতকাল ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রামে বিপদসীমার মাত্র ২০ সে.মি. নিচে এবং দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ^রীতে মাত্র ৮ সে.মি. নিচে পৌঁছে গেছে। এতে করে বন্যা কবলিত হয়েছে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলসমূহ।দেশের অন্যতম প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের সবক’টি পয়েন্টে পানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌঁছে যাচ্ছে সতর্কসীমার কাছাকাছি ধাবিত হচ্ছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদ নুনখাওয়া পয়েন্টে পানি আরো বেড়ে ৭২ সে.মি., হাতিয়ায় ৭৬ সে.মি., ৭৯ সে.মি. নিচে পৌঁছে গেছে। যমুনা নদের পানি বেড়ে সাঘাটায় ৪৭ সে.মি. নিচে রয়েছে। সিরাজগঞ্জে যমুনা নদের পানি বিপদসীমার ৮৭ সে.মি. নিচে থাকলেও নদ-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলো একে একে তলিয়ে যাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনাপাড় ও চর এলাকায় মানুষের মাঝে বিরাজ করছে বন্যা এবং নদীভাঙনের উদ্বেগ-আতঙ্ক।গতকাল পানি উন্নয়ন রোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র দেশের নদ-নদীর প্রবাহ পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস বুলেটিনে কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদে অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে সতর্কসীমায় পেঁছাতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এর ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
বৈশি^ক আবহাওয়া সংস্থাসূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর সংলগ্ন উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীসমূহের পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে আগামী ৭২ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।
নদ-নদীর পরিস্থিতি সম্পর্কে পাউবো জানায়, পর্যবেক্ষণাধীন ১১০টি স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৬৯টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পায়, ৩৯টিতে হ্রাস পায় এবং একটিতে অপরিবর্তিত ছিল। পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে পূর্বাভাসে জানা গেছে, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধিতে চারটি জেলা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম ক্রমেই বন্যা কবলিত হচ্ছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020