রেল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

রেল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগেভাগে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। সরকারি ছুটির তালিকার সঙ্গে বাড়তি ছুটি নিয়ে কেউ কেউ আগেভাগেই পরিবারকে বাড়িতে পাঠিয়েছেন। আবার অনেকে শেষ কর্মদিবসে বাড়ি যাওয়ার টিকিট করেছেন। ফলে শেষ কর্মদিবসে অনেকে অফিসে হাজিরা হয়েই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। সকাল থেকে রেল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে।
রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী, মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড়, কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকায় ঘরমুখো মানুষের স্রোত ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রধান সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও বাসের সংখ্যাও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কমছে। গলির ভেতরের সড়কে রিকশার সংখ্যাও কমছে। কল্যাণপুরে ঘরমুখো মানুষের সংখ্যা ছিল অনেক। সদরঘাটের দিকে যেসব রুটের বাস যায় সেগুলো বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে থামে। সকালের দিকে চাঁদপুর এবং দক্ষিণাঞ্চলের যেসব মানুষ লঞ্চে যাবেন তাদের আনাগোনা বেড়েছে। কেউ সিএনজি অটোরিকশায়, কেউবা বাসে করে এসে বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে রিকশায় করে সদরঘাট যাচ্ছেন। রিকশাচালকরা অন্য সময়ের চেয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট যেতে ভাড়া কিছুটা বেশি নিচ্ছেন। এদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে একাধিক পরিবহন চলাচল করছে ফুলবাড়িয়া থেকে। ফলে সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-গাবতলী দিয়ে যারা এসব রুটের বাসে বাড়ি ফিরতেন তারা ফুলবাড়িয়া দিয়ে যাচ্ছেন। অনেককে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ফুলবাড়িয়া দিয়ে বাসে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। কোরবানির ঈদযাত্রার প্রথমদিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও দেরিতে ট্রেন ছাড়ছে। যদিও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, বুধবার দুই-একটি ট্রেন দেরিতে ছাড়লেও বৃহস্পতিবার দেরি করছে না। ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য যারা গত ৩ জুন অগ্রিম টিকেট কেটেছিলেন, তারাই গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রেনে বাড়ি ফিরেছেন।সরেজমিনে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি ট্রেন কমলাপুর থেকে বিলম্বে ছেড়ে গেছে। বেলা ১২ টার সময় স্টেশনের ড্যাশবোর্ডে দেখা গিয়েছে, ঢাকা থেকে খুলনাগামী নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ১১টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ছাড়েনি, কখন ছাড়বে সেটিও বলা নেই।
স্টেশন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, দিনের প্রথম ট্রেন রাজশাহীগামী ধ‚মকেতু এক্সপ্রেস ভোর ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশন ত্যাগ করেছে আধা ঘণ্টা পরে। দিনের দ্বিতীয় ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে স্টেশন ত্যাগ করার কথা থাকলেও সেটি সাড়ে ছয়টার দিকে স্টেশন ত্যাগ করে। তৃতীয় ট্রেন সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ঢাকা স্টেশন ছেড়েছে সকাল সাড়ে ৭ টায়। কিশোরগঞ্জের এগারোসিন্ধুর প্রভাতী ছাড়ার সময় ৭টা ১৫ মিনিট হলেও সেটি ৯ টার পর স্টেশন ত্যাগ করে। চট্টগ্রাম রুটের মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ৭টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলে ৮টায় ছেড়ে যায়।
সিলেটের পারাবাত এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জের এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার সময় চলে আসলেও এসব ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ করেনি। এসব ট্রেনের অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে যাত্রীদের। রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, ট্রেনগুলো ঢাকায় সময়মতো এলে সময়সূচি মেনে ঢাকা ত্যাগ করতে পারে। ট্রেনগুলো অধিকাংশ সঠিক সময়েই ছাড়ছে, এটাকে শিডিউল জটিলতা বলা যায় না। আগামী কয়েকদিনে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণকাজ চলাচলের জন্যে কিছুটা বিলম্ব হবে বলে আগেই জানিয়েছেন তিনি। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরছেন তারা।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *