ছাত্ররাজনীতির নামে অপরাজনীতির বিপক্ষে বুয়েট অ্যালামনাই

ছাত্ররাজনীতির নামে অপরাজনীতির বিপক্ষে বুয়েট অ্যালামনাই

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে বর্তমান যা হচ্ছে তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছে বুয়েট অ্যালামনাই। একইসঙ্গে সংগঠনটি বলছে, ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্ররা যে নিরাপত্তাহীনতার কথা বারবার প্রকাশ করছে, সে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনার জন্য বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত ও মহাসচিব প্রকৌশলী মাহ্তাব উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় বুয়েট অ্যালামনাই।

এর আগে বুধবার (৩ এপ্রিল) বুয়েট অ্যালামনাই বোর্ড অব ট্রাস্টি ও বুয়েট আবাসিক হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিশিষ্ট অ্যালামনাইদের সাথে বুয়েট অ্যালামনাই এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাতের নেতৃত্বে একটি যৌথ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি বুয়েটে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট ও অনিশ্চয়তা বিষয়ে এই সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক পরিস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সকল সদস্য গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন।

সভায় এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক পরিস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সকল সদস্য গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতিসহ বুয়েটের সামগ্রিক ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক এবং শিক্ষার মান অক্ষুণ্ন রাখার ব্যাপারেও আলোচনা শেষে নিচের লিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১) বুয়েট অ্যালামনাই মনে করে যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পূর্ণ দায়িত্ব উপাচার্য ও সিন্ডিকেট;

২) ক’দিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি অনভিপ্রেত। এই সভা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে মত প্রকাশ করছে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর;

৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষা আর শিক্ষার মান সমুন্নত রাখবার জন্য বুয়েট অ্যালামনাইদের ভূমিকা অনস্বীকার্য এবং এই উদ্দেশ্যে তারা কর্তৃপক্ষের সাথে যুগপৎ ভাবে দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ;

৪) বিগত ৫ বছরে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম অবিঘ্নিত ও সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালিত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গবেষণার ক্ষেত্রে সম্মানজনক অর্জন ও স্বীকৃতির ক্রমোন্নতি এই ধারাবাহিক সাফল্যের সাক্ষ্য দেয়। উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে এই উন্নয়ন সাধনের জন্য বুয়েট অ্যালামনাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-এর সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষকমণ্ডলী ও প্রশাসনকে অভিনন্দন জানাতে চায় । এই পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া কারোরই কাম্য হতে পারে না। আগামীতেও বুয়েটের এই সংকল্প ও অভিলাষ লক্ষ্যচ্যুত না হয়ে আরও বেগবান হোক বুয়েট অ্যালামনাই এই সভার মাধ্যমে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করতে চায়;

৫) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষা ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষণায় মনোযোগ, সুশাসন, একাডেমিক নেতৃত্ব, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কলাবরেশন এবং প্রাক্তন ছাত্রদের পৃষ্ঠপোষকতায় বুয়েট ক্রমাগতভাবে তার বৈশ্বিক র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি সাধন করে চলেছে। ২০২১ সালে, বুয়েটের বিষয়ভিত্তিক র‍্যাংকিং ৩৪৭ ছিল, যা ২০২৪ এ ৩০৫ এ উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া একাডেমিক সূচকেও বুয়েটের পারফরম্যান্স লক্ষণীয়। প্রতিষ্ঠানটি তার একাডেমিক স্কোরে ক্রমাগত উন্নতির স্বাক্ষর রেখে চলেছে। ২০২১ সালে একাডেমিক স্কোর ৬৫.৩ ছিল, ২০২৪ সালে ৭২-এ উন্নীত হয়, যা কিনা একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *