নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার আছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার আছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

প্রয়াত কার্টুনিস্ট এম এ কুদ্দুসের সম্মানে স্মরণ সভা ও বাংলাদেশের অর্থনীতি-রাজনীতিতে কার্টুনের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ঢাকাস্থ রাজবাড়ী জেলা সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে এ সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ রাজবাড়ী জেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুল লতিফ মোল্লা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একটা ছবি অনেক শব্দ প্রকাশ করে থাকে, ঠিক তেমনি একটা কার্টুনও মিলিয়ন ওয়ার্ড প্রকাশ করে। একজন নাগরিকের কোনকিছু জানার অধিকার এবং প্রয়োজন দুটোই আছে। আমাদের দেশে অনেক ঘাটতি আছে, অন্যায় হচ্ছে, কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে দেশে ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে।
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের সবার উচিত কুদ্দুসের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। আমি তার স্ত্রীর একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাবো। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা ব্যবস্থা করা হবে।
এম এ মান্নান আরও বলেন, ওয়েজবোর্ড ঘোষণা হয়, কেউ এটা মানে, কেউ মানে না। ওয়েজবোর্ড যেহেতু সবার সঙ্গে আলোচনা করেই হয়েছে, তাহলে মানবে না কেন? না মানার স্কোপ কোথায়? সাংবাদিকতা পেশায় নিরাপত্তার জন্য ওয়েজবোর্ডের প্রয়োজনীয়তা আছে, এটা আমি বুঝতে পারি। আমি নিজেও সরকারি চাকরি করেছি, আমরা যেমন নিরাপত্তা পাই, আপনারা সাংবাদিকরা তেমনটা পান না। আবার কেউ কেউ নানা শর্টকাট উপায়ে অনেক দূর চলে যান। কিন্তু যারা মূল ধারার সাংবাদিকতা করে তাদের জীবন অনেক ঝড়-ঝাপটার। আমার ছোটবেলার অনেক সাংবাদিক বন্ধুদের দেখেছি ঢাকায় তারা অনেক কষ্ট করেছে।

আমাদের দেশ পরিবর্তন হচ্ছে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সার্বিকভাবে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। অস্বীকার করব না সেখানে অনেক গ্যাপ আছে, দৃশ্যমান ঘাটতি আছে, অন্যায় আছে। বাংলাদেশ সৃষ্টির তার থেকে বর্তমান সময়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে এটা নিশ্চিত। সেখানে এই পেশায় আপনারা যারা ভূমিকা পালন করছেন, আপনাদের প্রতি সমাজের এবং রাষ্ট্রের অবশ্যই দায়িত্ব আছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, কুদ্দুস ছিলেন বাংলাদেশ কার্টুন জগতের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি। তার সম্পর্কে বলতে গেলে আমি আবেগ প্রবণ হয়ে যাই। একজন কুদ্দুস এক দিনে তৈরি হয়নি। তিনি ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি আর্ট করতেন। সে ছিল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট। প্রচার বিমুখের কারণে তার কার্টুন বেশি প্রচার হয়নি। প্রচার করা হলে তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যেতেন। সে ছিল একজন দেশপ্রেমিক কার্টুনিস্ট।
সভাপতির বক্তব্যে নূরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, রাজবাড়ীর মানুষ কুদ্দুসকে কীভাবে চেনে আমি জানি না। তবে তার কার্টুন সারা বাংলাদেশে ছেয়ে গেছে। কুদ্দুসরা শুধু রাজবাড়ীর সম্পদ নয়, সারা বিশ্বের সম্পদ। আমরা যেন কুদ্দুসের সকল কার্টুন নিয়ে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠান করতে পারি সে বিষয়ে আপনারা সকলে সাহায্য করবেন। সংগঠনের পক্ষে আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কুদ্দুসের পরিবারকে আগে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা করেছি। এখন আরও ১ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
কুদ্দুসের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা বলেন, কুদ্দুস ছিলেন খুবই বিনয়ী। তিনি অল্পতেই তুষ্ট থাকতেন এবং খুশি হলে শিশুদের মতো একটি হাসি দিতেন। তার অকাল প্রয়াণ যাওয়া আমাদের জন্য বিশেষ করে আমার জন্য অত্যন্ত বেদনার।
অনুষ্ঠানে কুদ্দুসের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন, দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক ওবায়েদ আকাশ, নয়া দিগন্তের চিপ রিপোর্টার ও সমিতির অর্থ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের পান্থ আফজাল, সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক অরণ্য গফুর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক চন্দন সান্যাল।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিমন রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা রশীদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি ও সমিতির সহসভাপতি শাহীন হাসনাত। দপ্তর সম্পাদক শামীম মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক অরণ্য গফুর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নাহিদুর রহমান হিমেল, ক্রীড়া সম্পাদক শাহেদ আলী ইরশাদ, কল্যাণ ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক শামস সোহাগসহ আরও অনেকে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *