বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের ওপর বাড়ছে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক পর্যবেক্ষণ। এ পেক্ষাপটে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেছেন যে, কোনো নির্দিষ্ট দলকে নয়, যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে। বৃহস্পতিবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন। ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী পিটার হাস বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি, যেটি বাংলাদেশের জনগণকে আগামী সরকার নির্বাচনের সুযোগ করে দেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনুযায়ী আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সমর্থন করি। যেখানে কোনো পক্ষ থেকেই সহিংসতা হবে না। আমরা বিশ্বাস করি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রত্যেকের ভূমিকা আছে। সরকার, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, বিচার বিভাগ, সুশীল সমাজ, নিরাপত্তা বাহিনী প্রত্যেককে তার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।’
এর আগে, ৩০ জুলাই বাংলাদেশের ‘ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে’ এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাস। বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ৩০ জুলাই প্রকাশিত সেই বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘আমি আপনাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ধারণা দিতে চাই এবং কীভাবে সেটি থেকে কেবল আমাদের দুই পক্ষই নয়, বরং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল আরো বিস্তৃতভাবে উপকৃত হচ্ছে, আমরা দেখছি। এ দৃষ্টিভঙ্গিটি পাঁচটি সাধারণ লক্ষ্যের ওপর স্থির করা হয়েছে। আমি এসব লক্ষ্য এবং মার্কিন দূতাবাসে আমাদের দলটি কীভাবে সেগুলো উপলব্ধি করতে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সাথে কাজ করছে, সে সম্পর্কে বলতে চাই।
আমাদের প্রথম লক্ষ্য হল একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করা। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল যাতে স্বাধীন, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ থাকে তা নিশ্চিত করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করতে এবং প্রতিটি স্তরে আমাদের সামরিক বাহিনীর মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে মার্কিন সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করে আসছে। কৌশলগত পর্যায়ে, গত সেপ্টেম্বরে ঢাকাতে ৪৬তম বার্ষিক ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মি ম্যানেজমেন্ট সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ। এই সমাবেশটি মার্কিন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিচালিত হয়েছিল এবং এটি ছিল এ অঞ্চলের বৃহত্তম স্থল বাহিনীর সম্মেলন। এটি ইন্দো-প্যাসিফিকের আঞ্চলিক স্থল বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত ও ধারণা বিনিময়ের জন্য একটি সংগঠন প্রদান করেছে।
পরিচালনাগতভাবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং বিশেষ অভিযান দলকে সহায়তার জন্য অসংখ্য নতুন সামরিক সক্ষমতা প্রদান করেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ‘ফরেন মিলিটারি ফাইন্যান্সিং’ বা এফএমএফ এবং ‘গোবাল পিসকিপিং অপারেশনস ইনিশিয়েটিভ’র মতো অনুদান কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের সক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করি। মূল বিষয় হল এগুলো অনুদান, ঋণ নয়। কিছু সক্ষমতার নাম বলতে, আমরা মাইন-রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রোটেক্টেড (এমআরএপি) সাঁজোয়া যান এবং রোবট বোমা সরবরাহ করেছি, যা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের রক্ষা করতে সাহায্য করে, অতিরিক্ত সক্ষমতার মধ্যে রয়েছে সমুদ্র জয় এবং সমুদ্র আভিযানের মতো নৌবর এবং চারটি সি-১৩০বি বিমান