নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থান, প্রেসিডেন্ট আটক

নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থান, প্রেসিডেন্ট আটক

ক্ষমতা দখলের পর দেশজুড়ে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট এখনো প্যালেসে বন্দি। বুধবার (২৬ জুলাই) দেশের একদল সেনা প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজাউমের প্রাসাদ ঘিরে ফেলেছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা গেছিল, প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তায় থাকা কিছু এলিট গার্ডও সেনা বিদ্রোহে সামিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার এএফপি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সেনা সেখানে ক্ষমতা দখল করেছে। বিদ্রোহী সেনাদের তরফে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একদল সেনা প্রেসিডেন্টের চেয়ারের পিছনে এবং সেনা উর্দি পরিহিত এক কম্যান্ডার প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসে।
কর্নেল মেজর আমাদউ অ্যাবড্রামানে জানিয়েছেন, ক্ষমতা এখন তাদের হাতে। ক্ষমতা দখলের পরেই গোটা দেশে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের সমস্ত সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাজাউমের অফিস ঘটনার কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেও সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে একই সঙ্গে তার অফিস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এবং তার পরিবার সুস্থ আছে। ঘটনার পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিশ্বনেতারা। আফ্রিকার দেশগুলির সংগঠনের পক্ষ থেকে নাইজেরিয়া এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছে। তাদের বক্তব্য, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জেতা সরকারকে সরিয়ে যেভাবে সেনা ক্ষমতা দখল করেছে, তা অন্যায়। দ্রুত প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে তারা। বস্তুত, নাইজেরিয়া নাইজারের প্রতিবেশী। তারা প্রেসিডেন্টকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার দাবিও করেছে।আমেরিকাও একই দাবি করেছে। দ্রুত প্রেসিডেন্টের মুক্তির কথা লিখেছেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, বিদ্রোহের খবর প্রথম ছড়ানোর পরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। ব্লিংকেনের হুমকি, কেবলমাত্র গণতান্ত্রিক নাইজারের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখবে আমেরিকা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক জোসেপ বরেল লিখেছেন, আফ্রিকার দেশগুলি যে বিবৃতি দিয়েছে, ইইউ তার সঙ্গে সহমত। দ্রুত প্রেসিডেন্টের মুক্তির দাবি করেছেন বরেল নাইজারে একাধিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আছে। আইএস সন্ত্রাসীরাও সেখানে নিয়মিত হামলা চালায়। খুন, অপহরণ, বিস্ফোরণের ঘটনা সেখানে চলতেই থাকে। ফলে ন্যাটোর শান্তিবাহিনী সেখানে মজুত আছে। বেশ কিছু জার্মান সেনা আছে সেখানে। সেনা বিদ্রোহের পর শান্তি বাহিনীর অবস্থান নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শান্তি বাহিনী আপাতত তাদের ঘাঁটিতে আছে। নাইজারের বিদ্রোহী সেনা তাদের সঙ্গে কী করবে, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *