রাজনীতির মাঠ গরম মুখোমুখি আ.লীগ-বিএনপি

রাজনীতির মাঠ গরম মুখোমুখি আ.লীগ-বিএনপি

বেশ কিছু দিন ধরে দেশের রাজনীতির মাঠ গরম। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদল রাজধানীসহ সারাদেশে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করছে বিএনপি। অপরদিকে বিএনপিকে ঠেকাতে পাল্টা শান্তি সমাবেশ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) তাদের কার্যক্রম থাকলেও শেষ পর্যন্ত শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুই দলই একই সময়ে তাদের কর্মসূচি পালন করেছে দু’দলের ডাকা পাল্টাপাল্টি এমন কর্মসূচি ঘিরে গত কয়েক দিন রাজনীতিতে বিরাজ করছে উত্তাপ, উৎকন্ঠা। উদ্বেগে দিন কাটছে সাধারণ নগরবাসীর। দু’চিন্তায় রয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। দেশের সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে শুক্রবার দিনভর শঙ্কায় ছিলেন রাজধানীবাসী। থেমে থেমে বৃষ্টি আর ছুটির দিন থাকায় শঙ্কা কিছুটা কম ছিল মানুষের মনে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অনেকে বাসার বাইরে বের হননি। রাস্তায় ছিলনা অফিসগামী মানুষের ভিড়। গণপরিবহনও ছিল তুলনামুলক কম।
কোনো প্রকার সংঘাত ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে দুই দলের কর্মসূচি শেষ হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিল রাজধানীবাসী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা হয়নি। যদিও কর্মসূচি চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে সন্ধ্যায় গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দু’গ্রপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে ফের রাজধানীতে কর্মসূচি ডেকেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দল। শনিবার (২৯ জুলাই) ঢাকার প্রবেশমুখে মুখোমুখি অবস্থানে কর্মসূচি পালন করবে তারা। ফলে এ নিয়ে নতুন করে চিন্তায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। রাজধানীর মালিবাগে পরিবার নিয়ে থাকেন রফিকুল ইসলাম।গ্রামের বাড়ি ফেনী। কাজ করেন শান্তিনগরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি নিউজকে জানান, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। রাজনীতি বুঝিনা। বুঝতেও চাই না। যে সরকারেই ক্ষমতায় আসুক, সমস্যা নাই। শুধু চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। আমরা সাধারণ মানুষ, শান্তি চাই। বাচ্চাদের স্কুলে দিতে চাই। যাতে কোন প্রকার টেনশান না করতে হয়। সহিংসতা চাই না।রাজধানীর এ্যালিফ্যান্ট রোডে ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন ফরিদপুরের কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভাই খুব কষ্টে আছি। টেনশানে আছি। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা হলে মানুষ বের হয়না। বেচাকেনা বন্ধ থাকে। আমাদের মত পরিবার না খেয়ে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তাসনুভা শেরিন বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা কারোই কাম্য নয়। আমরা কেউ তা চাইনা। সবাইকে আগে দেশের কথা ভাবতে হবে। রাজনীতি হওয়া উচিত দেশের কল্যাণে। আমাদের দেশে রাজনীতি হয় দলের কল্যাণে। এটা মোটেও কাম্য নয়।এবার মহাসমাবেশ থেকে শনিবার (২৯ জুলাই) ঢাকার সব প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলম
অপরদিকে একই দিনে একই এলাকায় পাল্টা অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেআওয়ামী লীগও। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর থেকে রাতে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। দুদলের এমন কর্মসূচির ডাকে নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃংখলা হিনী। দু’দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক পুলিশ, বিজিবি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কাউকে রাস্তা আটকাতে দেওয়া হবে না। কেউ রাস্তা আটকালে ব্যবস্থা নেব।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *