মেডিটেশন চর্চার মাধ্যমে সুস্থ কর্মোদ্যমী মানবিক সহমর্মী জাতি গঠন

মেডিটেশন চর্চার মাধ্যমে সুস্থ কর্মোদ্যমী মানবিক সহমর্মী জাতি গঠন

দেশে দিন দিন বাড়ছে মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্যে বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজন মেডিটেশন, এমন পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি যোগ-মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহল।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের এমন পরামর্শ সামনে রেখেই দেশব্যাপী ২১ মে পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। মেডিটেশন চর্চার মাধ্যমে সুস্থ কর্মোদ্যমী মানবিক সহমর্মী জাতি গঠনের লক্ষ্যে ‘ভালো মানুষ ভালো দেশ স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালন করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। দিবসকে স্বাগত জানিয়ে রোববার ভোর ৬টায় ঢাকাসহ সারাদেশে একযোগে বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে প্রাণায়াম বা দমচর্চা, প্রত্যয়ন পাঠ ও মেডিটেশন চর্চার কর্মসূচি থাকছে। গত কয়েক বছর ধরে পৃথিবীজুড়ে কিছু প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের উদ্যোগে বিশ্ব মেডিটশন দিবস পালিত হয়ে আসছে। আর বাংলাদেশে দিবসটি নিয়ে কাজ করছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।

বিশ্বজুড়ে এখন প্রায় ৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক অর্থাৎ টোটালি ফিট থাকতে মেডিটেশন বা ধ্যানের কার্যকারিতা এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমান বিশ্বে সংক্রামক ব্যাধির চেয়ে অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপই বেশি। হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, উচ্চ-রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মেদস্থূলতা, বিষণ্নতা, অনিদ্রা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, স্ট্রেস ইত্যাদির ফলে মৃত্যুর হার বাড়ছে। এসব অসুস্থতা থেকে মুক্ত থেকে সুস্থ কর্মক্ষম জীবন পেতে সচেতন মানুষ তাই ঝুঁকছেন এখন লাইফস্টাইল বা জীবনধারা পরিবর্তনের দিকে। আর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের একটি বড় উপাদান হলো, দৈনন্দিন জীবনে মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চাকে অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট ধ্যানচর্চা হতে পারে প্রশান্ত ও সুস্থ জীবনের পথে একটি উল্লেখযোগ্য অনুঘটক। সাথে বৈজ্ঞানিক খাদ্যাভ্যাস, যোগ ব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম, ভালো ঘুম, ইতিবাচক চিন্তা, হাসি ইত্যাদি যুক্ত হলে তো কথাই নেই। অসংক্রামক ব্যাধির দৌরাত্ম্য কমে যাবে। বেড়ে যাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কর্মক্ষমতা ও প্রাণচাঞ্চল্য। ফলে সাশ্রয় হবে চিকিৎসা ব্যয়; যা ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও ফেলবে ইতিবাচক প্রভাব।
বাংলাদেশে মেডিটেশন চর্চার ইতিহাসে টানা ৩০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। এই চর্চার সাথে যুক্ত হয়েছেন লাখও মানুষ। নিয়মিত মেডিটেশন চর্চাকারীরা বিশ্বাস করেন, মেডিটেশন চর্চার ভেতর দিয়ে সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। এ চর্চা সর্বত্র ছড়িয়ে গেলেই আমাদের দেশ হয়ে উঠবে সুস্থ সবল কর্মদ্যোমী সহমর্মী এক জাতিতে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *