রাসূলুল্লাহ (সা.) স্বীয় উম্মতগণকে লক্ষ্য করে বলেছেন, যে লোক চিন্তা-ভাবনা, পেরেশানি-কিংবা কোনো জটিল সমস্যার সম্মুখীন হবে, তার পক্ষে নিম্নলিখিত বাক্যগুলোর জিকির করা উচিত। তাতে সমস্ত জটিলতা সহজ হয়ে যাবে। এবং মহান আল্লাহপাক তার ফরিয়াদ কবুল করবেন।
জিকির : (১) (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল্ আজীমুল্ হালীম), অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি মহান, সহনশীল।
(২) (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজীম), অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি মর্যাদাপূর্ণ আরশের মহান প্রতিপালক।
(৩) (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুছ, ছামাওয়াতি ও রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল আজীম), অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি আসমানসমূহ ও জমিনের প্রতিপালক এবং মর্যাদাপূর্ণ আরশের মহান প্রতিপালক। তবে, কোনো কোনো বর্ণনায় (ওয়া রাব্বুল আরশিল কারীম), অর্থাৎ ‘তিনি সম্মানিত আরশের প্রতিপালক’ বাক্যটি ও পাওয়া যায়।
(৪) রাসূলুল্লাহ (সা.) খাতুনে জান্নাত মা ফাতেমা যাহারা (রা.) কে লক্ষ্য করে বলেছেন : আমার অসিয়ত শুনে নিতে তোমার বাধা কিসে? সে অসিয়তটি হলো এই যে, সকাল সন্ধ্যায় তুমি এই দোয়াটি পড়ে নেবে : ‘ইয়া হাইয়্যু, ইয়া ক্বাঈয়্যুমু, বিরাহমাতিকা আস্তাগিছু’, অর্থাৎ হে চিরঞ্জীব, হে সবকিছুর ধারক! আমি আপনার রহমতের বিনিময়ে উদ্ধার কামনা করছি।
‘আছলিহ লী শানী কুল্লাহু’, অর্থাৎ আমার যাবতীয় ব্যাপার ঠিক ঠাক করে দিন। ‘ওয়ালা তাকিলনী ইলা নাফসি তারফাতা আইনিন্’, অর্থাৎ আর আমাকে আমার নাফসের কাছে ক্ষণিকের জন্যও সোপর্দ করবেন না। (সহিহ বুখারি : ৬৩৪৫; সহিহ মুসলিম : ২৭৩০)।
সার কথা হলো এই যে, মহান আল্লাহপাক উম্মতে মোহাম্মাদীকে দু’টি বরকতময় হেদায়েত দান করেছেন। একটি হলো এই যে, যে কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য, যে কোনো বিপদ থেকে মুক্তিলাভের জন্য শুধুমাত্র আল্লাহকেই ডাকবে। কোনো সৃষ্টিকে নয়। আর অপরটি হলো এই যে, আল্লাহকে সে নামেই ডাকবে, যা তাঁর আসমাউল হুস্না অর্থাৎ গুণবাচক নাম হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তার শব্দের কোনো পরিবর্তন করবে না।
আল্লাহর নামের ওসিলা দিয়ে দোয়া করা জরুরি। আল্লাহপাক স্বয়ং ওয়াদা করেছেন : তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের প্রার্থনা মঞ্জুর করব। (সূরা মুমিন/গাফির : ৬০)। তিনি আরও ইরশাদ করেছেন : যখন কোনো আহ্বানকারী আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। (সূরা আল বাকারাহ : ১৮৫)।
উদ্দেশ্য সিদ্ধি কিংবা জটিলতা বা বিপদ মুক্তির জন্য দোয়া ছাড়া অন্য কোনো পন্থা নেই, যাতে কোনো না কোনো ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না, কিংবা ফল লাভ নিশ্চিত হয়। মূলত : দোয়া একটি এবাদত তার সওয়াব প্রার্থনাকারীর আমলনামায় তখনই লেখা হয়ে যায়। হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে : দোয়াই হলো এবাদত। (আবু দাউদ : ১৪৭৯; জামেয়ে তিরিমিজি : ৩২৪৭)।
লেখকঃ মোঃ কামাল উদ্দিন,লেকচারার,ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ,আতকরা কলেজ,কুমিল্লা।