৪৪ বছর বয়সী নারী কাউন্সিলর এসএসসি দিচ্ছেন

২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ৪৪ বছর বয়সী রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভার নারী কাউন্সিলর জলিদা বেগম। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট।

জানা গেছে, গত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে  কয়ামাজমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরি শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। নবম শ্রেণির বোর্ড ফাইনলাম পরীক্ষায় পেয়ছেন ৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। এই ৪৪ বছর বয়সে এসে চাকরি করার ইচ্ছাও নেই জলিদা বেগমের। পারিবারিক অভাবগ্রস্ততার কারণে ছোটবেলায় লেখাপড়া করতে পারেননি তিনি। অভাবের সংসার হওয়ায় মা বাবা ছোটবেলাতেই বিয়ে দিয়ে দেন।

এ বিষয়ে জলিদা বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি। নিজ এলাকায় প্রায়ই সালিস দরবার করতে হয়। এখনকার যুগে সবাই শিক্ষিত। আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে অশিক্ষিত। এজন্য অনেকেই হাসি ঠাট্টা করে। অনেকেইে গোনায় ধরে না। সালিস দরবারে আমার স্বাক্ষর দেখলে অনেকেইে মুখ চেপে হাসে। তখন নিজেকে খারাপ লাগে। ছোটবেলায় পড়াশুনা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে এমনটা হয়। এ কারণে বয়স বেশি হলেও পড়ালেখা শুরু করি।

কাউন্সিলর জলিদা বেগমের বাড়ি দুর্গাপুর পৌর এলাকার নান্দোপাড়া গ্রামে। তিনি দুর্গাপুর পৌরসভার সংরক্ষিত নারী আসন সিংগা-বহরমপুর, রৈপাড়া ও নান্দোপাড়া-চৌপুকুরিয়া ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তিনি ৩ সন্তানের জননী।

কয়ামাজমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব সাজ্জাদ আলী বলেন, বয়স বেশি হলেও পড়ালেখায় ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে জলিদার। প্রতিটি পরীক্ষা তিনি ভালোভাবে দিচ্ছেন। তাঁর লেখার মধ্যে কোনো জড়তা দেখা যায়নি। লেখাপড়ার প্রতি জলিদা বেগমের এই আগ্রহ অনেক স্বল্পশিক্ষিতকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

দুর্গাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহীদুল হক বলেন, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। আগে সুযোগ পাইনি। তাই সে এখন পড়ালেখায় আগ্রহী। এখন এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে। এটা তরুণ সমাজের জন্য ভালো একটা বার্তা।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *