ছিনতাইয়ের শিকার রাবি শিক্ষক

ছিনতাইয়ের শিকার রাবি শিক্ষক

ঈদের ছুটি কাটাতে স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীতে এসেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) বেলা পৌনে ৩টার দিকে রিকশা করে জিপিও এলাকার গোলাপশাহ মাজার রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। এ সময় অধ্যাপকের স্ত্রীর গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এক ছিনতাইকারী।

ঘটনায় মাত্র ১০ গজ দূরে থাকা পুলিশ বক্সে ছুটে যান অধ্যাপক। পরে থানায় অভিযোগও করেন। কিন্তু পুলিশের কাজের ‘অগ্রগতি’ না দেখে রোববার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার স্থান থেকে ফেসবুকে লাইভ করেন ওই শিক্ষক।

পাঁচ মিনিটের লাইভে অধ্যাপক সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানান, সচিবালয় গুলিস্তান ও পুরান ঢাকার সম্মিলনস্থল গোলাপশাহ মাজার এলাকা। এলাকা খুবই নিরাপদ হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে গত শনিবার তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হন। এক ছিনতাইকারী তার স্ত্রীর গলার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে গেলে সেখানে থাকা পুলিশের কাছে তিনি সহায়তা চান। কিন্তু পুলিশ তাকে কোনো সাহায্য করেনি।

লাইভে অধ্যাপক মামুন চৌধুরী বলেন, “আমি যখন পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলাম, পুলিশের একটি পিকআপ ছিল, অনেকগুলো পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। তারা আমাকে বলল, ‘ছিনতাই কোন জায়গায় হয়েছে, স্পটটা দেখান’। তাদের চোখের সামনে ছিনতাইকারী দৌড়ে চলে গেল, তারা ছিনতাইকারী ধরার বদলে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, কোন থানার অধীনে পড়েছে।”

তিনি বলেন, পুলিশ বলছে- ওটা পল্টন থানায় হয়েছে, আমরা দেখতে পারি না। গোলাপশাহ মাজার একটা গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলের মতো, সেটা ক্রাইম ট্রায়াঙ্গলে পরিণত হয়েছে। তিন অঞ্চলের পুলিশ তারা কেউ কাজ করছে না। একজন আরেকজনকে দোষ দিচ্ছে।

অধ্যাপক আরও বলেন, ‘আমি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমার হাতে তো কোনো ক্ষমতা নেই। কাজেই আমি এখানে যখন পুলিশকে বললাম, একজন আমাকে বলছে- আপনি তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আপনি গাড়িতে কেন চলাচল করেননি। আপনি কেন রিকশায় চলাচল করেছেন। আপনারা বলেন, আমরা কি গাড়িতে চলাচল করব? এ দেশের হাজার হাজার মানুষ রিকশা দিয়ে চলাচল করে। তাহলে তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? আমার গাড়ি নেই, এ জন্য কি আমার নিরাপত্তা থাকবে না। এখানে পুলিশ যে দাঁড়িয়ে আছে, তার কাজ কী? পিকআপে পুলিশ ছিল, তার কাজ কী?’

অধ্যাপক অভিযোগ করে বলেন, পল্টন থানায় অভিযোগ দেয়ার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনও তার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। এই বাংলাদেশে নাগরিকদের সচেতনতা ছাড়া নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ঘটনার পর তাকে মামলা করার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি মামলা করেননি। মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর ভাষ্য, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই সচেতনতা বাড়াতে ফেসবুকে লাইভ করেছি।মামলা করার বিষয়ে তিনি বলেন, তবে আমি থানায় যে অভিযোগ করেছি, পুলিশ তার পরিপেক্ষিতেই কাজ করতে সক্ষম। এ ক্ষেত্রে মামলা জরুরি নয়।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *