তিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অবৈধ ঘোষণা, ৫টিতে ভর্তি বন্ধ

নানা অভিযোগে তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আরও পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৯ মার্চ ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

বর্তমানে দেশে ১১০টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর আটটি এখনও শিক্ষাক্রম শুরু করতে পারেনি।

বৈধ’ ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা। আর ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা), স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি।

ইবাইস, আমেরিকা বাংলাদেশ এবং ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা সম্পর্কে ইউজিসি বলেছে, এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রমের আর কোন ‘আইনগত ভিত্তি’ নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনুমোদিত কোন ক্যাম্পাস ও ঠিকানা এবং চ্যান্সেলর তথা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই তথা ‘বৈধ কোন কর্তৃপক্ষ নেই’।

এর ফলে এ তিন ইউনিভার্সিটির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলাফল এবং ‘একাডেমিক সনদের আইনগত কোন ভিত্তি নেই’ বলে ইউজিসির গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে ইউজিসি বলেছে, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সাল হতে চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। চ্যান্সেলর নিয়োগকৃত বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি, অপ্রতুল শিক্ষক সংখ্যা, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, শিক্ষা সহায়ক ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি, লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় পাঠ্য বইয়ের অপ্রতুলতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিশন কর্তৃক পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি।

আর নির্ধারিত সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাসহ সব কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হওয়ায় ইউজিসি কর্তৃক পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত গত ১ জানুয়ারি থেকে চারটি নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রয়েছে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ চার প্রতিষ্ঠান হলো স্টামফোর্ড, ভিক্টোরিয়া, আশা এবং প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি।

এছাড়া ইবাইস, ব্রিটানিয়া এবং সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ঢাকার বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে ইউজিসি জানিয়েছে।

দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েকবছর আগে কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ঘুষ দাবি করেছিলেন ইউজিসির তৎকালীন একজন কর্মকর্তা (বর্তমান তিনি আরো বড় পদে রয়েছেন)। সেই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে নানামুখী চাপ ও হয়রানির মুখে রয়েছে ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *