অবশেষে এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ দান করার অনুমতি দিলেন আর বলে দিলেন, ততটুকুই অনেক! হযরত সাদ (রা.)-এর পেছনে নিজের মেয়েকে ঠকানোর মতো কোনো মন্দ উদ্দেশ্য ছিল না, তা বলাবাহুল্য। মন্দ উদ্দেশ্য থাকলে তিনি বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সামনে উপস্থাপন করতেন না। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, দুই-তৃতীয়াংশ সম্পদ দান করার পরও যা থাকবে, এক মেয়ের জন্যে অতটুকুই অনেক। বোঝা যাচ্ছে, একটি আমল আল্লাহ তা’আলার নিকট মাকবুল ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য কেবল নিয়তের শুদ্ধতাই যথেষ্ট নয়। যথেষ্ট নয় বিশুদ্ধ নিয়তের পাশাপাশি আমলটি নেক ও সুন্দর হওয়া ।
দুই. নিয়ত যখন বিশুদ্ধ হয়, বাহ্যত মামুলি বিষয়ও হয়ে ওঠে অনেক মূল্যবান। হাদীসে দৃষ্টান্তস্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে স্ত্রীর মুখে খাবারের লোকমা তুলে দেয়ার কথা। এক বিবেচনায় এটা এমন আর কী কাজ! আবার স্ত্রীর খাবারের ব্যবস্থা করা, তার পোশাক ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, এসব তো স্বামীর স্বাভাবিক দায়িত্বের অংশ। স্বামী যখন নিজের কাঁধে অর্পিত সে দায়িত্বটুকু পালন করছে আর ভাবছে এর মধ্য দিয়ে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনের কথা, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ভাষ্যমতে, তার এ কাজটুকুও পুরস্কারযোগ্য!
নিয়তের বিশুদ্ধতায় বাহ্যত একটি তুচ্ছ কাজ যেমন- ফজিলতে-মর্যাদায় মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে, তেমনি দৃশ্যত অনেক মূল্যবান কাজও নিয়তের অশুদ্ধতায় হয়ে পড়তে পারে মূল্যহীন। এর দৃষ্টান্তও বর্ণিত হয়েছে হাদিস শরিফে। হাদিসটি বিখ্যাত এবং বহুল চর্চিত।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সকল আমল নিয়ত অনুসারেই মূল্যায়িত হয়। আর প্রত্যেকে তাই পাবে, যা সে নিয়ত করেছে। ফলে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে (অর্থাৎ তাঁদের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে) হিজরত করে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে হয়েছে বলেই বিবেচিত হবে। আর যে হিজরত করে, পার্থিব কোনো বিষয় হাসিল করার জন্য, কিংবা কোনো নারীকে বিয়ে করার লক্ষ্যে, তার হিজরতের মধ্য দিয়ে সে কেবল তার উদ্দিষ্ট বিষয়ই হাসিল করতে পারবে। (সহীহ মুসলিম : ১৯০৭)।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকল নেক দোয়া কবুল করুক এবং মহানবী (সঃ) এর সুন্নাহ মোতাবেক চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।।
লেখকঃ প্রভাষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, আতাকরা কলেজ, কুমিল্লা, বাংলাদেশ।
ইমেইলঃ[email protected]