বিএনপি ক্ষমতায় এসে দেশকে পরনির্ভরশীল করে তোলে-প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে চলমান লোডশেডিংয়ের সমালোচনা করে হারিকেন নিয়ে বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেখলাম বিএনপির নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করছে। তাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে। আর আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো।’

সোমবার (১ আগস্ট) কৃষকলীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্ত ও প্লাজমা দান কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে দেশকে পরনির্ভরশীল করে তোলে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয় দেশ। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, খুন-খারাবিতে ভরে যায়। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি। শিক্ষার্থীদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করে তারা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে বিএনপি  ক্ষমতায় এসে মানুষের জন্য কী করেছে। বরং ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ যেসব উদ্যোগ নিয়েছিল, পরে ২০০১ সালে তারা ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে পিছিয়ে দেয়।’।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, এই যে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল এত সফল অসহযোগ আন্দোলন পৃথিবীর কোনো নেতা কখনোই করতে পারেনি এবং এই অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বিপ্লবের উত্তোরণ ঘটে। এটা কিন্তু একমাত্র সারাদেশে জাতির পিতা শেখ মুজিবই করতে পেরেছিলেন। বাঙালির বিজয় যে অর্জিত হবে সে বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত ছিলেন।’

‘তখনো আইয়ুব খান চেষ্টা করেছিল ফাঁসি দিয়ে জেল দিয়ে রুখতে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তখন প্রতিবাদ করে, সংগ্রাম করে। গণঅভ্যত্থানের মধ্য দিয়েই কিন্তু আইয়ুব খান বাধ্য হয়েছিল মামলা প্রত্যাহার করতে, মুজিবকে মামলা থেকে বাদ দিতে। তাই কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থাতেও এতটুকু চিন্তাগ্রস্ত হননি।

সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন তিনি (বঙ্গবন্ধু) মুক্তিলাভ করলেন, নয়টি মাস বন্দি কারাগারে থাকা অবস্থায় দুর্বিসহ জীবনযাপন করেও যখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফিরে আসেন। তখন এসেই চলে যান জনতার কাছে। আমার মা ব্যাকুল হয়ে বসেছিলেন। আমরা সবাই ব্যাকুল হয়ে বসেছিলাম্। কখন আমাদের বাবা আসবে। তিনি তো আমাদের না, তিনি জনতার। জনতার কাছেই চলে গিয়েছিলেন।’

বাবার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, মাত্র সাড়ে তিনটা বছর আমরা তাকে পেয়েছিলাম। ছোট্ট রাসেল সারাক্ষণ বাবার পাশ দিয়ে ঘুরতো। ওর মনে একটা ভয় ছিল যে কখন হারায়। পরে একসঙ্গে সবাইকে চলে যেতে হলো। ঘাতকের দল তাদরে নির্মমভাবে হত্যা করল।
যাদের জন্য শেখ মুজিব জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তাদের হাতেই জীবন দিতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘একটা স্বাধীন রাষ্ট্র যখন সৃষ্টি করে, যারা মেজর ছিল আমাদের সেনাবাহিনীতে তাদের মেজর জেনারেল পর্যন্ত প্রমোশন একমাত্র জাতির পিতা শেখ মুজিবই দিয়েছিলেন। বাঙালির একজন সাধারণ অফিসার কোনো সেক্রেটারি হতে পারত না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবই তো সেই পদ দিয়েছিলেন। অথচ কি দুর্ভাগ্য তিনি যাদেরকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করলেন, যাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করলেন আমরা সন্তান হিসেবে বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হলাম, আমার মা সারাটা জীবন যে ত্যাগ স্বীকার করলেন আর সেই বাঙালিদের হাতেই আমার বাবা, মা, ভাইদের জীবন দিতে হলো।এত বড় বেঈমানি এত বড় মুনাফেকি কিভাবে করে? এই কষ্টের উত্তর কখনো খুঁজে পাইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *