সদ্য প্রকাশিত ফলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) চান্স পেলেন মেহেদী নামে একজন কুলির ছেলে। তবে মেহেদীর এই সাফল্য যাত্রা সহজ ছিলো না। মেহেদী হাসান ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া ইউনিয়নের ঘুরনগাছ গ্রামের আবুল হোসেন ও নাসিমা বেগম দম্পতির সন্তান।
মেহেদীর বাবা অন্যের চাতালে কুলির কাজ আর মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। ছোট থেকেই মা-বাবা এমন কষ্ট করতে দেখছেন তিনি। তাদের পারিবারিক সম্পত্তি নেই, সম্পদ বলতে শুধুমাত্র বসতভিটা।
জানা যায়, অভাবের সংসার! তাই অর্থের যোগান দিতে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা চলতে থাকে। তবে চোখ ভরা স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার পর আরও প্রবল হয়ে ওঠে। আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন তিনি। টিউশনি ও বন্ধুদের সহযোগিতায় এইচএসসি পাস করেন মেহেদী। এবারও জিপিএ-৫।
মেহেদীর মা নাসিমা বেগম জানান, অনেক কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করেছি। একটা সময় ছিল তিনবেলা খেতে পারতাম না। ছেলেকে ঠিকমতো পড়াশোনার খরচ দিতে পারিনি। আজ মেহেদী বুয়েটে চান্স পেয়েছে, আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। সবাই মেহেদীর জন্য দোয়া করবেন।
মেহেদী জানান, মা-বাবাকে কোনোদিন বাসায় বসে থাকতে দেখিনি। বাবা চাতালে কাজ করেন আর মা দিনমজুরি। পড়াশোনা করা অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। মা-বাবা আমাকে পড়াশোনায় সব সময় উৎসাহ দিত। তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরাও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। বিনা পয়সায় প্রাইভেট পড়িয়েছেন। অভাবে পড়াশোনা থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়। বাড়ির কাঁঠালগাছ বিক্রি করে পড়াশোনা চালাই। মেহেদী বলেন, এইচএসসির পর ঘুড্ডি ফাউন্ডেশনে বৃত্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে তাদের মাধ্যমে থাকা-খাওয়া বিনা মূল্যে পেয়ে বুয়েটের জন্য কোচিং করি। এখন আমি আরও অনেক দূর যেতে চাই।